রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইটিভি চেয়ারম্যানের স্বীকারোক্তি

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৯, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:২৭ অপরাহ্ণ

আদালত প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

etv chairman

একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন ঢাকা সিএমএম আদালতে।

সোমবার পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়া মোহাম্মদ আদনানের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মশিউর রহমান।

আবদুস সালাম ফৌজদারি কাযবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দী দেন। তবে জবানবন্দীতে কী বলেছেন তা জানা যায়নি।

গত ১১ জানুয়ারি রোববার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ায়েস কুরুনি খান চৌধুরী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, তারেক রহমানের সঙ্গে পারস্পরিক যোগসাজশে আসামি আব্দুস সালাম পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারেক রহমানের মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য সরাসরি তার টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভিতে প্রচার করেন। ওই বক্তব্য প্রচারের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং দেশের সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ ও বিদ্বেষ সৃষ্টির হয়েছে।

এর আগে ৮ জানুয়ারি বিএনপি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং আবদুস সালামের বিরুদ্ধে সরকারের অনুমতিক্রমে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি দায়ের করেন তেজগাঁও থানার এসআই বোরহানউদ্দিন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা ২৮ মিনিটে (যুক্তরাজ্য সময় (৪/১/২০১৫ ইং সন্ধ্যা ১৯:২৮ মিনিট) যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ব্যানারে এক প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন বিচারাধীন মামলার পলাতক আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এক সুদীর্ঘ (প্রায় ৫০ মিনিট) বক্তব্য প্রদান করেন।

তার এই দীর্ঘ বক্তব্য একুশে টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। ওই বক্তব্যে “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি একজন রাজনৈতিক নেতার কবর জেয়ারত করে এবং রাজনৈতিকত বক্তব্য দিয়ে নিরপেক্ষ ও ন্যায় বিচার করতে পারবেন না।”মর্মে তিনি মন্তব্য করেন, যা স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল। সেই সাথে রাষ্ট্রর অন্যতম অঙ্গ বিচার বিভাগের প্রতি জনগনের ঘৃনা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার ইন্ধন যোগায়। বিডিআর হেডকোয়ার্টাস পিলখানায় আওয়ামী লীগের মুখোশপরা লোকেরা ৭৫ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে বলেও তারেক রহমান মিথ্যা বক্তব্যে বলেন। উক্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দাবিদার সেনা অফিসারদের চাকরিচ্যুত করা হয় মর্মে বক্তব্য দেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়, তার এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে উস্কে দেয়ার তথা সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে।

“একটি বিশেষ এলাকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে” বক্তব্যের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ ও বিভক্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করতে প্ররোচিত করার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রয়াস চালান। তারেক রহমান প্রশাসনের লোকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার লক্ষে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠত সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

তিনি তার বক্তব্যে ঢাকা শহরকে অন্য জেলা শহর থেকে এবং ঢাকার এক এলাকাকে অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন, যার ফলে বিএনপি জামায়াতসহ ২০ দলীয় ঐক্য জোটের সমর্থকরা গত ৫ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের মাধ্যমে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করার উস্কানি পায় এবং তিনি বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও পরোক্ষভাবে সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করেছেন।

তার ওই সব বক্তব্য আব্দুস সালাম এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত, গনতান্ত্রিক ও আইনানুগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উস্কানিমূলক বিভ্রান্তিকর তথ্যাদি একুশে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি মধ্যরাতে ইটিভি কার্যালয়ের নিচ থেকে সালামকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তাকে ক্যান্টনমেন্ট থানার পর্নোগ্রাফি আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৬ জানুয়ারি আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৮ জানুয়ারি ওই মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/বাবর

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G